হাওজা নিউজ এজেন্সি: নবী করীম (সা.) ইরশাদ করেছেন,
أكرِموا العلَماءَ فانّهم ورثةُ الانبیاءِ فَمَن أكرَمَهُم فَقد أكرَمَ اللهَ و رسوله
আলেমদের সম্মান করো, কারণ তারা নবীদের উত্তরাধিকারী। যে ব্যক্তি তাদের সম্মান করল, সে যেন আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকেই সম্মান করল।
[নাহজুল ফাসাহা, হাদিস- ৪৫০]
প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যা:
১. আলেমগণ নবীদের ওয়ারিস:
- শিয়া ইসলামের মতে, মা‘সুম ইমামগণ (আ.) হলেন নবীদের প্রকৃত উত্তরাধিকারী এবং তাদের পর এই দায়িত্ব জাগ্রত ফকীহদের (উলামায়ে রাব্বানী) উপর অর্পিত হয়েছে।
- ইমাম জাফর আস-সাদিক (আ.) বলেছেন, “আমাদের হাদিসের বাহক (রাবী) ও আলেমগণই নবীদের প্রকৃত ওয়ারিস।” (বিহারুল আনোয়ার, খণ্ড- ২)
২. আলেমদের মর্যাদা ও ইজ্জত:
- শিয়া মাযহাবে, মুজতাহিদ ফকীহগণ (যারা ইজতিহাদের স্তরে পৌঁছেছেন) হলেন নায়েবে ইমাম (ইমামের প্রতিনিধি), বিশেষ করে গায়েবাতুল কুবরা’র যুগে।
- ইমাম মাহদী (আ.)-এর তৌকী অনুযায়ী: “ঘটনাপ্রবাহে ফকীহদের দিকেই ফিরে যাও, কেননা তারা তোমাদের উপর আমার হুজ্জাত (প্রমাণ)।” (ইহকাকুল হক, খণ্ড- ১২)
৩. সম্মানের শর্ত ও রূপ:
শিয়া আকিদায়, শর্তসাপেক্ষে আলেমদের সম্মান করা হয়:
- তারা যদি আদিল (ন্যায়পরায়ণ) এবং মুত্তাকী (খোদাভীরু) হন।
- তারা আহলে বাইত (আ.)-এর বেলায়েত ও ইমামতের নীতিকে সমুন্নত রাখেন।
- ইমাম আলী (আ.)-এর বাণী: “সত্যবাদী আলেমই নবীর উত্তরাধিকারী, কিন্তু মিথ্যাবাদী আলেম ফেরেশতাদের শত্রু।” (গুরারুল হিকাম)
শিয়া পার্সপেক্টিভ থেকে সতর্কতা:
- শিয়া উসুলে, ফাসেক বা বিদ‘আতি আলেমদের অনুসরণ নিষিদ্ধ।
- ইমাম খোমেইনি (রহ.) বলেছেন, “যে আলেম দুনিয়াপ্রেমী বা শাসকের তোষামোদকারী, সে নবীর উত্তরাধিকারী নয়—বরং ইবলিসের সৈন্য।”
শিক্ষা:
- শিয়া মাযহাবে মারজায়ে তাকলীদ (অনুসরণীয় ফকীহ) এবং উলামায়ে রাব্বানীদের সম্মান ঈমানের অংশ।
- কিন্তু তাদের ইলমি যোগ্যতা, তাকওয়া ও আহলে বাইতের প্রতি আনুগত্য যাচাই করা জরুরি।
সূত্র: বিহারুল আনোয়ার, মাকাবিসুল উসুল, ইহকাকুল হক, ইমাম খোমেনির লেখনী।
আপনার কমেন্ট